Kanyashree Prakalpa 2024 | কন্যাশ্রী প্রকল্প উদ্দেশ্য, কী কী সুবিধা পাবেন ও আবেদন করার জন্য কী কী প্রয়োজনীয় নথিপত্র লাগবে

Sampad
7 Min Read

কন্যাশ্রী প্রকল্প : পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নতুন একটি প্রকল্প তৈরি করেছিলেন, যা কন্যাশ্রী প্রকল্প নামে পরিচিত। প্রকল্পটি 2013 সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছিলেন। এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হল আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের শিক্ষা ও বিভিন্ন দিক থেকে যেমন ( স্বাস্থ্য, সমাজে সম্মান ইত্যাদি ) দিক থেকে আর্থিক সহায়তা করা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রকল্পগুলি মধ্যে Yuvashree Prakalpa 2024 খুবই প্রচলিত।

কন্যাশ্রী প্রকল্প ভূমিকা :

আগেকার দিনে মেয়েরা বাল্যবিবাহের শিক্ষার হতো, তার হাত থেকে বাঁচানার জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মেয়েরা যাতে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পতে পারে। কন্যাশ্রী প্রকল্পটি মূলত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের চালু করা সর্বোচ্চ কার্যকরী কল্যাণমূলক প্রকল্প। কন্যশ্রী প্রকল্পটি তিনটি ধাপে সহায়তা করা হয়, যা kanyashree k1, kanyashree k2, kanyashree k3 নাম নামকরণ করা হয়।

কন্যাশ্রী প্রকল্প কী :

কন্যাশ্রী প্রকল্প হলো মেয়েদের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের নেতৃত্বে, একটি উদ্যোগ। দরিদ্য পরিবারের মেয়েদের শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া জন্য, এই প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক ভাবে সহায়তা করা। মেয়েদের শিক্ষা হার কামানো হলো এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য।

কন্যাশ্রী প্রকল্প উদ্দেশ্য :

প্রথমত, কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হলো অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া দরিদ্য পরিবারের অন্তর্ভুক্ত মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা জন্য আর্থিক ভাবে সহায়তা করা। দ্বিতীয়ত, মেয়েদের বাল্যবিবাহ বন্ধ করা যায় সেই জন্য তাদের এই প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিকভাবে সহায়তা করা। তৃতীয়ত, এই প্রকল্পের মাধ্যমে মেয়েদের শিক্ষার হার বাড়ানো।

কন্যাশ্রী প্রকল্প কারা পাবে :

পশ্চিমবঙ্গের যে সমস্ত শিক্ষার্থীদের 14 বছরের বয়সের বেশি তারা এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করা প্রার্থীদের অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে এবং যেকোনো স্বীকৃত সরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করতে হেব। শিক্ষার্থীদের 13 থেকে 18 বছর বয়স পর্যন্ত অর্থাৎ ক্লাস VIII- XII এর পড়াশোনা করতে হবে, তাহলেই শিক্ষার্থীরা কন্যাশ্রী প্রকল্পে আবেদন করতে পারবে।

কন্যাশ্রী প্রকল্প আবেদনেই যোগ্যতা :

কন্যাশ্রী প্রকল্পটি তিনটি বিভাগে আর্থিক ভাবে সহায়তা করা হয়, তাই এই প্রকল্পটিতে তিনটি বিভাগে আবেদন করার জন্য সেসব যোগ্যতা থাকা দরকার তা নিচের তালিকায় আলোচনা করা হলো –

কন্যাশ্রী প্রকল্প k1 যোগ্যতা

  • আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • শিক্ষার্থীদের পারিবারিক আয় 1,20,000 টাকার কম হতে হবে।
  • আবেদনকারীদের বয়স সীমা 13 থেকে 17 বছর মধ্যে হতে হবে।
  • আবেদনকারীদের বাধতামূলক অবিবাহিত যেতে হবে।
  • আগ্রহী শিক্ষার্থীদের যেকোনো স্বীকৃত সরকারী প্রতিষ্ঠানে VIII- XII শ্রেণির শিক্ষার্থী হতে হবে।

কন্যাশ্রী প্রকল্প k2 যোগ্যতা –

  • আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • শিক্ষার্থীদের পারিবারিক আয় 1,20,000 টাকার কম হতে হবে।
  • আবেদনকারীদের বয়স সীমা 18 থেকে 19 বছর সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই এই প্রকল্পের আবেদন করতে হেব।
  • আবেদনকারীদের বাধতামূলক অবিবাহিত যেতে হবে।
  • আগ্রহী শিক্ষার্থীদের যেকোনো স্বীকৃত সরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী হতে হবে।

কন্যাশ্রী প্রকল্প k3 যোগ্যতা –

  • আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা কন্যাশ্রী প্রকল্প k2 তে রেজিস্টেশন করেছে তারাই শুধুমাত্র কন্যাশ্রী প্রকল্প k3 তে আবেদন করতে পারবেন।
  • কন্যাশ্রী প্রকল্প k3 এর জন্য কোনো নির্দিষ্ঠ বয়স সীমা নেই।
  • শিক্ষার্থীদের যেকোনো স্বীকৃত সরকারি কলেজ থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েশন করতে হবে।
  • অবশ্যই আবেদনকারীদের গ্রাজুয়েশন ডিগ্রিতে 45% নাম্বার পেতে হবে।

কন্যাশ্রী প্রকল্প আবেদন করার পদ্ধতি :

কন্যাশ্রী প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট টি হলো wbkanyashree.gov.in [CLICK HERE]। কন্যাশ্রী প্রকল্পের আবেদন করার পদ্ধতি নিচের তালিকায় ধাপে ধাপে আলোচনা করা হলো –

  • প্রথমত, শিক্ষার্থীদের তাদের স্কুল থেকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে.
  • তারপরে, কন্যাশ্রী ফর্ম পূরণ করার জন্য প্রথমে নামের বানান সঠিক থাকতে হবে।
  • শিক্ষার্থীদের তাদের বৈধ মোবাইল নাম্বার দিতে হবে, কারন পরবর্তীকালে সমস্ত তথ্য এস.এম.এস. মোবাইলে মাধ্যমে আসবে।
  • ফর্ম ফিলাপ করার জন্য অবশ্যই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থকতা হবে, ফর্মটিতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বরটি সঠিকভাবে লিখতে হবে।
  • ফর্মটিতে একেবারে লাস্টের পাতায় আবেদনকারীদের স্বাক্ষর করতে হবে।
  • এরপরে, সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র গুলি সংযুক্ত করতে হবে।
  • অবশেষে, আপনার নথিযুক্ত ফর্মটি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে জমা দিতে হবে।

কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 প্রয়োজনীয় নথিপত্র :

কন্যাশ্রী প্রকল্পের আবেদন করার জন্য আবেদনকারীদের সে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র গুলি জমা দিতে হবে তা নিচের তালিকায় আলোচনা করা হলো –

  • আধার কার্ড।
  • আবাসিক শংসাপত্র।
  • জন্ম সার্টিফিকেট।
  • আয়ের শংসাপত্র।
  • রেশন কার্ড।
  • শিক্ষাগত সার্টিফিকেট।
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তথ্য।
  • পাসপোর্ট সাইজের এর ছবি।
  • অবিবাহিত সার্টিফিকেট।

কন্যাশ্রী প্রকল্প স্ট্যাটাস চেক :

কন্যাশ্রী প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক (kanyashree status check) করার জন্য নিচের তালিকায় পদক্ষেপ গুলি দেওয়া হলো –

  • প্রথমে আবেদনকারীদের কন্যাশ্রী প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট যেতে হবে।
  • তারপরে, “Track Application” এর ক্লিক করতে হবে।
  • “Track Application” এর ক্লিক করার পর আপনার সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য গুলি লিখুন।
  • তথ্য গুলো পূরণ করার পর “Submit” অপশনে ক্লিক করুন।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা :

  • কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রতিটি মেয়েরা স্কুলে যেতে উৎসাহিত হবে।
  • কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা গিয়েছিলো।
  • এই প্রকল্পের মাধ্যমে মেয়েদের দক্ষতার বিকাশ ও তাদের ক্ষমতা উন্নয়ন করা হচ্ছে।

কন্যাশ্রী প্রকল্পে কোন বিভাগে কত করে টাকা পাবেন :

কন্যাশ্রী প্রকল্প k1 – প্রতি বছর 750 টাকা করে পাবেন।

কন্যাশ্রী প্রকল্প k2 – এককালীন 25,000 টাকা পাবেন।

কন্যাশ্রী প্রকল্প k3 – প্রতি বছর বিজ্ঞান বিভাগে 2,500 টাকা করে এবং কলা বিভাগে 2,000 টাকা করে পাবেন।

কন্যাশ্রী প্রকল্প কত সালে চালু হয় ?

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে 8ই মার্চ 2013 সালে চালু করেছিলেন। যা আনুষ্ঠানিকভাবে 14ই আগষ্ট 2013 সালে বাস্তবায়ন করা হয়।

কন্যাশ্রী প্রকল্প দিবস কবে পালিত হয় ?

সারা রাজ্যে 14ই আগষ্ট কন্যাশ্রী প্রকল্প দিবস হিসাবে পালিত করা হয়।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা কবে পাবে ?

কন্যাশ্রী প্রকল্পের আবেদন করার 2 মাসের মধ্যে পেয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।

Share this Article
Leave a comment